প্রকাশিত: Fri, Dec 16, 2022 3:53 PM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 6:46 AM

শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং একান্ন বছরের বাংলাদেশে

মোহাম্মদ এ আরাফাত

একাত্তরের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। পশ্চিম পাকিস্তানিরা তখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আর্মি পাঠিয়ে গণহত্যা চালাচ্ছিলো। এমন বাস্তবতায় পৃথিবীর কাছে আমরা আপিল করেছিলাম, যেন আমাদের সহযোগিতায় সবাই এগিয়ে আসেন। কারণ আমরা গণহত্যার বিপক্ষে ও অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিলাম। সেটা ছিলো একরকমের বাস্তবতা। বাংলাদেশ এখন স্বাধীন রাষ্ট্র। একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের ভেতরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা থাকতে পারে। মানবাধিকার, সুশাসন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে সংকট আছে। বাংলাদেশ নিজেই তার সকল সমস্যার সমাধান করবে। একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে বিদেশিদের কাছে যখন আমরা নাক গলানোর জন্য আবেদন করি, এটা করতে গিয়ে যখন আমরা বলি, ভাই, পদ্মা সেতু বন্ধ করে দাও, আমাদের কাছ থেকে আমদানি বন্ধ করে দাও, শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দাওÑ এটা কোনোভাবেই ভালো কাজ নয়। এ ধরনের কাজ দেশদ্রোহিতার পর্যায়ে পড়ে। 

দেশে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য কিছুটা সময় দিতে হবে। শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে সেই চেষ্টাই করছেন। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যাই কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা করা হলো। শিশু রাসেলকেও যখন ঘাতকেরা হত্যা করলো, তখন কোথায় ছিলেন মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা? একাত্তরে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিলো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগ একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের বিচার করে বিচারের একটা সংস্কৃতি চালু করেছে দেশে। একটা ন্যায্যতা ও আইনের শাসনের সংস্কৃতি চালু করেছে সরকার। আওয়ামী লীগের হাত ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় না, মানবাধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। 

জঙ্গি দমন করতে গিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ক্রসফায়ার হয় না? মাদকের যখন বিস্তার ঘটে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, যখন যুবসমাজ ধ্বংসের উপক্রম তৈরি হয়, সরকার যখন তা শক্তহাতে দমন করতে যায়, সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও এমনটি ঘটতে দেখা যায়। আমাদের এখানেও ঘটেছে। কিন্তু আমরা কোনোভাবেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করি না। সমর্থন করার প্রশ্নই আসে না। আমরা চাই এদেশে পূর্ণাঙ্গভাবে গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার নিশ্চিত থাকবে সবার জন্য সমানভাবে।  

একটা জটিল পরিস্থিতির মধ্যেও শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশে বারো ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো, বারো ঘণ্টা অন্ধকারে থাকতো মানুষ। এখন বিদ্যুৎ সংকট নেই, তাই তো মানবাধিকারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে! সব চিন্তা এখন মানবাধিকার নিয়ে। যে রাজনৈতিক দল এ  দেশকে স্বাধীন করেছে, যে দলের নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, যে নেতার নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা দেশ চালাচ্ছেন। এ দেশের প্রতি মায়া, ভালোবাসা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি কারও নেই। এটা প্রমাণিত হয়েছে গত তেরো বছরে। এই দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হয়েছে। পদ্মা সেতু হয়েছে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বিজয়ী হয়েছেন শেখ হাসিনা। কোনো ষড়যন্ত্রই টিকবে না শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কাছে। 

বিশ^ব্যাংক যখন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলো, তখনো বাংলাদেশবিরোধী অনেক অপশক্তি খুশি হয়েছিলো। আরও খুশি হয়েছিলো যখন বিশ^ব্যাংক বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা সরকারের বদনাম করে অর্থ প্রত্যাহার করে চলে গিয়েছিলো। পদ্মা সেতুর পুরো প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছিলো। বাংলাদেশবিরোধীরা অনেক খুশি হয়েছিলো। এই দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে কারা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়? আমরা কি তাদের চিনি না? অবশ্যই চিনি। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনগণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নেতৃত্ব সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে, দুর্নীতির অভিযোগকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কানাডার আদালতে বিশ^ব্যাংকের সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছিলো। বিশ^ব্যাংকের অর্থ ছাড়াই যখন পদ্মা সেতু করে ফেলছে বাংলাদেশ, কারা দুঃখী হচ্ছে? বাংলাদেশের অভূতপূর্ব এই সাফল্যে সবচেয়ে অখুশি হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের দালালেরা। বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকেরা। যা কিছু বাংলাদেশের বিপক্ষে হবে, তাতেই তারা খুব খুশি! 

আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচন দেয় না কেন? আমরাও তো সুষ্ঠু নির্বাচনই চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়াও তো হয়। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতে গেলেই বিরোধী দলগুলো বলতে শুরু করে, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি’! সংকট আসলে এখানেই। নির্বাচন নিয়ে দেশের কিছু মানুষের একটা অদ্ভুত ধরনের মানসিকতা আছে। সকলেই জোর করে নির্বাচনে জিততে চান। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোর করে জিততে না চাইলেও দলের অনেক প্রার্থী জোর করে নির্বাচনে জিততে চান। একই প্রবণতা বিএনপির মধ্যেও আছে। রেজা কিবরিয়ারা আজকে অনেক কথাই বলছেন। তাদের একবার সুযোগ দিয়ে দেখুন, দেখবেন ভোট তারাও চুরি করছেন। এটা একটা অদ্ভুত কালচার। আমরা নির্বাচনকে ওইভাবে নিতেই পারি না যে, জিতলে জিতবো, হারলে হারবো। নির্বাচনে জয়ের জন্য শ্রম ও ঘাম দিয়ে মানুষের মন জয় করে নির্বাচনে জিতবো। না জিতলে নেই। এই কালচার তো শেখ হাসিনা একা রাতারাতি বদলে দিতে পারবেন না। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে আমাদের আলাদাভাবে চিন্তা করতে হবে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন যদি হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। কেউ দাঁড়াতেই পারবে না আওয়ামী লীগের সামনে। যারা এখন বড় বড় কথা বলছেন, তাদের তো জামানতই বাজেয়াপ্ত হবে। 

আওয়ামী লীগ এখন রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। তৃণমূল পর্যন্ত তার শিকড়। জনগণের দল। এই দল রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলে আমি মনে করি দেশে গণতন্ত্র আছে। কিন্তু যাদের কোনো ভিত্তিই নেই, উপর থেকে একেকজনকে বসানো হয়েছিলো, সাবেক আইএমএফ, বিশ^ব্যাংক কিংবা সাম্রাজ্যবাদের দালালী করা লোক ছিলেন তারা। ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচনে দাঁড়ালেও তারা জিততে পারবেন না। সেই লোকগুলোকে দিয়ে ওয়ান ইলেভেনের সরকার বানানো হয়েছিলো, তারা দেশের স্ট্রাকচার ঠিক করে দেবেন? এর চেয়ে স্বৈরাচারী ও কর্তৃত্ববাদী চিন্তা তো হতেই পারে না। এমন চিন্তা যারা করেন তারা গণন্ত্রের ‘গ’ সম্পর্কেও ধারণা রাখেন না।  

বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার অবকাঠামোর পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও উন্নতি শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি শেখ হাসিনারই দাবি ছিলো। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনী ব্যয় কমানোর জন্য রঙিন পোস্টার বাদ দিয়ে সাদা-কালো পোস্টারের দাবি শেখ হাসিনারই ছিলো। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের করে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করার দাবি শেখ হাসিনারই চিন্তা ও দাবি ছিলো। বায়োমেট্রিক ফ্রিঙ্গারপ্রিন্ট ও ইভিএম শেখ হাসিনাই পরিচিত করেছেন। নির্বাচনী অবকাঠামো তৈরিতে আমেরিকার নসিহত নেওয়ার দরকার নেই আমাদের। যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের চরকায় নিজে তেল দিক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি যে দায় আমাদের, সেই স্বার্থেই বাংলাদেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে। 

নির্বাচনকেন্দ্রিক ঝামেলাগুলোর টেকসই সমাধান বের করতে হবে। একটা অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন ছিলো। যেখানে মানবাধিকার সম্মুন্নত থাকবে, বিরোধীদলের নেত্রীকে বোমা মেরে হত্যার চেষ্টা করবে না কেউ। ফ্রিডম অব স্পিচ সম্মুন্নত থাকবে। বাচ্চাদের উসকিয়ে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা ব্যবহার করে আর শাপলা চত্বর বানানোর পাঁয়তারা হবে না। অপরাজনীতির চর্চা থাকবে না। আমেরিকা বাংলাদেশকে নিয়ে এসব স্বপ্ন দেখে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বপ্ন দেখে আমরা যেন তাদের তাঁবেদারি করি। আমেরিকা ও তাদের দালালদের কাছ থেকে শোনার দরকার নেইÑ বাংলাদেশে আমরা কী করবো। কীভাবে চলবো। কী সিদ্ধান্ত নেবো। 

স্বাধীন ও সার্বভৌম বৈদেশিক নীতিতে বাংলাদেশ এগোচ্ছে। এটা সাম্রাজ্যবাদীদের পছন্দ হচ্ছে না। আর্ম-টুইস্ট করার জন্য বিশে^র আরও কোনো কোনো দেশ বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার মতো ব্যাপার দিলেও দিতে পারে। অসুবিধা নেই। কিন্তু এই আর্ম টুইস্ট করার চেষ্টা করে পদ্মা সেতুতে জিততে পারেনি। এখনো পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বিজয়ী হবে। 

আওয়ামী লীগ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় থাকতে চায়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিরোধীদলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। বিরোধীদল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, আবার অংশগ্রহণ করে যদি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নির্বাচনী পোস্টার না ছাপায়, কোথাও সেই পোস্টার না সাঁটায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ঘণ্টা দুয়েক পর সরে যায় নির্বাচন খারাপ হয়েছে অভিযোগ তুলে, তাহলে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু পারেনি। বিরোধীগুলো যদি সঠিক সযোগিতা করে, তাহলে একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। নির্বাচনে জিতলে ভালো, হারলে মেনে নিতে হবেÑ এই মানসিকতা তৈরি করতে হবে। শেখ হাসিনার সামনে দাঁড়ানোর মতো, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মতো কোনো নেতা এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নেই। একটা জরিপ করুক কেউ এখনÑ৭০ শতাংশ মানুষ যদি শেখ হাসিনার পক্ষে ভোট দিতে না চান, তাহলে আমি কথা বলা বন্ধ করে দেবো। 

বিরোধী দলগুলোর দৃষ্টিতে তো ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ তো লেজিটিমেট সরকার ছিলো। ওই নির্বাচন ওয়ান ইলেভেনের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো, আওয়ামী লীগের অধীনে নয়। ওটা তো একটা বৈধ সরকার। বিরোধী দলগুলো তো বলে থাকে, ২০১৪ পরবর্তী নির্বাচনগুলো ভালো হয়নি। ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত বৈধ সরকার ছিলো। কৈফিয়ত দিতে হলে সরকার জনগণের কাছে দেবে। আওয়ামী লীগ তো জনগণের দল। জনগণ থেকে জন্ম, ক্যান্টনমেন্ট থেকে জন্ম নয়। আমেরিকার ডোসিয়ার থেকে জন্ম নয়। দালালী করেও জন্ম নয়। জনগণ থেকেই জন্ম। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই-সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগের বেড়ে ওঠা। জনগণের কাছে কৈফিয়ত দিতে আওয়ামী লীগ ভয় পায় না। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদের কাছে আওয়ামী লীগ কৈফিয়ত দিতে চায় না। দালালদের কাছেও কৈফিয়ত দেবে না কখনো। 

জনগণ যা চাইবে সেটাই ফাইনালÑগণতন্ত্রে। জনগণের সিদ্ধান্তে আমাদের আস্থা আছে। বিশ^াস ও ভরসা আছে। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করা দল। আওয়ামী লীগের কোনো শক্তিও নেই জনগণ ছাড়া। আওয়ামী লীগকে তো দালালী করতে হয় না কোনো সাম্রাজ্যবাদের। জনগণই একমাত্র ভরসা আওয়ামী লীগের। জনগণই একমাত্র শক্তি দলটির। আওয়ামী লীগের ৭০ বছরের ইতিহাস এর প্রমাণ। এটা ডোসিয়ার থেকে জন্ম নেওয়া দল নয়। 

স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা, স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের  চাওয়ার সঙ্গে আমিও শতভাগ একমত। এটা আমাদেরও চাওয়া। সকলেরই চাওয়া। আমরাও চাইÑবাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদের আস্ফালন থাকবে না। যুদ্ধাপরাধীদের আস্ফালন থাকবে না। এখানে ধর্ম, বর্ণ, জাত-পাত নির্বিশেষে সকলের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করবে। জনকল্যাণমূলক একটি রাষ্ট্র হবে যেখানে মানবাধিকার ও ফ্রিডম অব স্পিচ প্রটেকটেড থাকবে। যে যার মতো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে। এটাই তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এমনটি চাইলে তো কারও সঙ্গে দ্বিমত নেই। কিন্তু গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে গণতন্ত্রের বিপক্ষে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরির চেষ্টা করবে, মানুষকে সেনসিটাইজ করে উসকানি দেবে, দাঙ্গার পরিবেশ তৈরি করবে, ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে, ষড়যন্ত্র করবে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করবে তার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান। রাজনীতির বিপক্ষে আমাদের অবস্থান নয়। রাজনীতির নামে ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান। যে যার রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচার করবে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নয়, কিন্তু অপব্যাখ্যার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান। পরিচিতি : চেয়ারম্যান, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন